Thai born Refugee poet Lang Leav’s poems in Bengali Translation
থাই উদ্বাস্তু
তরুণী
কবি
ল্যাঙ
লিভ যার প্রতিটি
কবিতার
বই
আন্তর্জাতিক
বেস্টসেলার
ল্যাঙ
লিভ থাই তরুণী কবি, তার প্রতিটি বই আন্তর্জাতিক বেস্টসেলা। তিনি একজন সোসাল মিডিয়া
সেনসেশনও। ইতোমধ্যে কবিতার জন্য তিনি জিতে নিয়েছেন ‘কোয়ান্টাস স্পিরিট অব ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’
আর বহুল প্রত্যাশার চার্চিল ফেলোসিপ। তার লোলাবিস বইটি ২০১৪ সালে ‘গুডরিড চয়েস অ্যাওয়ার্ড ফর পোয়েট্টি’ জিতে নেয়।
ল্যাঙ লিভ তার প্রথম কবিতা শেয়ার করেন ২০১২ সালে Tumblr-এ। একই বছর নিজ নিজ খরচে প্রকাশ করেন তার প্রথম
কবিতার বই ‘লাভ এন্ড মিসঅ্যাডভেঞ্চার’। বহু পত্রিকা- ম্যাগাজিন যেমন সিডনি মর্নিং হেরার্ল্ড,
দ্য স্ট্র্যাইট টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ইত্যাদি তাকে নিয়ে ফিচার
করেছে। বর্তমান নিবাস নিউজিল্যান্ডে, সঙ্গে আছে সঙ্গী মাইকেল ফাউডেট।
সমসাময়িক
কবি-লেখকদের মধ্যে ল্যাঙ লিভই সম্ভবত একমাত্র কবি যার বক্তব্য বড় বেশি আবেগ জাগানিয়া
ফলে বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তরুণরা তা লুফে নেয়। বইয়ের দোকানগুলোতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ
কবিদের বইয়ের পাশাপাশি তার বই শোভা পাচ্ছে। সাধারণ পাঠকের সঙ্গে বড় কবিরাও তার বই গোপনে
নিচ্ছেন তার ভাব নিজেদের মধ্যে সঞ্চারিত করার জন্য। কথোপকথনের ভাষা ব্যবহার করে ঐতিহ্যবাহী
স্তবকে তিনি সাজান তার কবিতা-যাতে যে কেউ তার কবিতা পড়ে বুঝতে পারে, বিশেষ করে নিয়মিত
যারা নতুন কিছু খোঁজেন। তার পাঠকরা ল্যাঙ লিভ কীভাবে লিখছে সেটা না নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে
নতুন কী লিখেছে সেটাই বরং দেখছে। এখন প্রশ্ন হলো, ল্যাঙ লিভের কবিতায় নেশা ধরিয়ে দেবার
কী কারণ থাকে সেটাই এখন আমাদের খুঁজতে হবে?
কারণ
হলো তার কবিতায় থাকে প্রেম, বিচ্ছেদ-বিরহ, নতুন সম্পর্ক এবং আত্মার ক্ষমতায়ন সম্পর্কে
এক ধরনের অন্তর্দৃষ্টি, প্রজ্ঞা আর উৎসাহ। তার বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় তরুণদের জন্য
থাকে প্রবহমান এক আকর্ষক শক্তি, সম্পর্কের গভীরতা, টানাপোড়েন, ভেঙে যাওয়ার বেদনা পাঠকদের
মধ্যে মুহূর্তে ছড়িয়ে যায়। তার বই বেস্টসেলার হওয়ার আরেকটি কারণ তার উৎসাহী পাঠক। সোসাল
মিডিয়া তাকে যথেষ্ট সাহায্য করে। বই বের হওয়ার সংবাদ তাদের মাধ্যমে কম সময়ের ছড়িয়ে
যায়। যেমন ‘লাভ লুকস প্রেটটি অন ইউ’ বইটি বাজারে আসার আগে Yee S Ai-Yin (যে কিনা
লিভের একজন একনিষ্ঠ থাই পাঠক, মালয়েশিয়ায় প্রবাসী) লিখেছে: ‘‘আমি নিজেও কবিতা লিখি।
আপনার কাছ থেকে পাই প্রচুর অনুপ্রেরণা। আপনার প্রথম বই লাভ এন্ড মিসঅ্যাডভেঞ্চার এখনো
আমার কাছে আছে। এবং আমি প্রতিবার নতুন বইয়ের অপেক্ষায় থাকি, যাতে সেটি আমার বুকসেলফের
শোভা বাড়াতে পারে। মালয়েশিয়াতে আমাদের দেখা হয়েছিল। আশা করি আবার যখন আপনি এখানে আসবেন-আমার
কেনা বইয়ে অটোগ্রাফ দেবেন। আপনার লেখালেখির অন্তহীন সাফল্য কামনা করি।’’
দু’টি
আত্মা কি প্রেমে পড়তে পারে? এক পাঠকের এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে ল্যাঙ লিভ বলেছিলেন:
‘‘হ্যাঁ, পারে। দু’টি আত্মার প্রেমে পড়া অর্থ হলো, তাদের নিকটবর্তী হওয়া। পরস্পরের
হাত ধরা। হাসি দেখে মনের কথা বুঝতে পারা। এমনকি এতটুকুন স্পর্শ, আত্মার দিনপুঞ্জি নেই,
ঘড়ি নেই, নিকট-দূরত্বের ব্যাপার অনুধাবনের ক্ষমতা নেই, তবু মনে রাখে।’’
তার
দেশের সমালোচকগণ লিখেছেন: ‘‘অন্যের মধ্যে আবেগ ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা ল্যাঙ লিভের মত আর
কারও নেই। আধুনিক কবিতার প্রভাবশালী লেখিকা হিসেবে তিনি তার দেশের এমনকি বিদেশেরও নতুন
প্রজন্মের কবিদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করছেন।’’
ল্যাঙ লিভের কবিতা
আমি দুঃখিত
এই কবিতাটি আমি বইয়ে দিয়ে
দিলাম
যদিও এখনও শেষ হয়নি এটি
আরও কিছু বাক্য লেখার
ধৈর্য্য ছিল না আমার, আমি
দুঃখিত।
ফুলগুলো আমি তুলে নিয়েছিলাম
ওদের ফুটার আগেই
সূর্য তখনও আলো দিচ্ছিল
প্রার্থনার মত করে
তাদের পেটেলে রঙের ওপর
আমি দুঃখিত।
যে মানুষটিকে আমি
ভালোবেসেছিলাম, শুধু ভালোবেসেছিলাম
ভালোবাসা কী বোঝার আগে
কারও কাছে তা নিবেদনের
আগে
আমি ছিলাম অপ্রস্তুত, আমি
দুঃখিত
প্রাণবন্ধু
জানি না কীভাবে তুমি আমার
এত বেশি পরিচিত, হয়তো এ জন্যই তোমাকে আরও বেশি করে জানার প্রয়োজন বোধ করিনি। অবশ্য
এ জন্যই মাঝেমধ্যে প্রশ্ন জাগে: তুমি কে? কেমন করে প্রতিটি হাসিতে, ফিসফিসানিতে তুমি
আরও নিকটে টেনে নিচ্ছ আমায়। মনে মনে এক অসম্ভব উপসংহার টানি, আগে থেকেই চিনতাম তোমায়।
আগেও তোমায় ভালোবেসেছি, অন্য কোনো সময়ে, অন্য কোনো খানে, অন্য কোনো অস্তিত্বে।
গোলাপ
তুমি কখনো গোলাপ ভালোবেসেছ?
দেখেছ তার ধীরলয়ে প্রস্ফুটিত
হওয়া;
এবং যেভাবে তার সৌন্দর্য়
অবমুক্ত হয়?
তুমি তার সুগন্ধে মাতাল
হয়েছিলে
তুমি কি কখনো তার নাচ দেখেছ?
তার সব পাতা শিশিরে ভেজা
থাকত।
এবং বাতাসের রোমান্সে একটু
একটু কাঁপত।
তুমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ
করতে গোলাপ
এরপর তাকে, হ্যাঁ, যে তোমাকে
অনেক ভালোবাসত।
তুমি কি কখনো চেয়েছ তাকে?
সেইসব রাতে, যেগুলোতে তুমি
একটুও ঘুমোতে না
মনে পড়ে তোমার? আপাতত তার
চেহারা অস্পষ্ট
স্মৃতির অনেক একটি দীর্ঘ
রেখা হয়ে গেছে সে..
তুমি কি কখনো গোলাপ ভালোবেসেছ?
কাঁটার আঘাতে কি রক্তাক্ত
হয়েছে কখনো?
এবং প্রতিটি রাতে তাকে
যে শপথ করাতে বাইরে যাওয়ার আগে
এরপর ভোরের সময়টাতে আরও
বেশি ভালেবাসত...
বিশ্বাস
আমি প্রার্থনার মত করে
তোমার নাম জপি-সকল স্বর্গীয় আশা নিয়ে
তোমার হস্তরেখা উদ্ধার
করেছি আমি এবং পরিত্রাণের একটি মানচিত্রও এঁকেছি।
তোমার হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন
আমি শুনছি আর উত্তর দিচ্ছি যেমন তারা ডাকছে আমায়।
প্রিয় বন্ধু, আহ্ বন্ধু,
ফেলে গেছে আমায়
এখন যা ইচ্ছে তোমার করতে
পার।
ভালোবাসা তুমি ত্যাগ করেছ-কোনোকিছু
না জানিয়ে,
এরপরও কেন তোমাকেই আমায়
ভালোবাসতে হবে?
আমার জন্য এই কি সবচেয়ে
ভালো যে, জীবনের
সবগুলো বছর, দিন, ঘণ্টা
তোমার পথ চেয়ে থাকি?
মূল্যবান সামান্য কিছুই
তুমি দিয়েছিল আমায়,
বিনিময়ে আমিও দিয়েছি, ঝরা
ফুলে শিশিরের মত
আমার ভালোবাসা, তুমি নির্দয়ভাবে
ছুঁড়ে ফেলেছে আমায়,
আামর সৌন্দর্য্য, আমার
শক্তি, আমার মন
যা কিছু ঈশ্বরের দান সবই
গ্রাস করল
তোমার উদ্ধত্যপূর্ণ গর্ব।
আমার ভালোবাসা, তুমি ভুলে
গেছে আমায়
দয়া করে বলো, কী ছিল অপরাধ,
কী শুনেছিলে?
এখন তোমার স্মৃতির ঈর্ষাপরায়ণ
পাহারাদার আমি
তোমার সঙ্গে কবরস্থ করেছি
আমার অন্তর।
চলতি সংখ্যা পাক্ষিক অনন্যা (1-15 নভেম্বর 2019)
চলতি সংখ্যা পাক্ষিক অনন্যা (1-15 নভেম্বর 2019)
![]() |
| কবি ল্যাং লিভ |




0টি মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এতে সদস্যতা মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন [Atom]
<< হোম